মোঃ আকতারুজ্জামান রানা পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চলতি মওসুমে ১৫ ইউনিয়নে ইউনিয়নে টিআর কাবিখা প্রকল্পে নানা অনিয়মসহ তোঘলকি কারবার চলছেই। খোদ উপজেলা সদরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরে বিধিমালা উপেক্ষা করে সংস্কারের নামে সাড়ে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স্র ভবনের ৪র্থ তলায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। যা পৌরসভার মধ্যেই অবস্থিত। অথচ গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার এর জন্য বরাদ্দকৃত নিজের কার্যালয়ের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন উক্ত কর্মকর্তা। মজার বিষয় হচ্ছে বরাদ্দকৃত সাড়ে তিন লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ১ লাখ টাকা ব্যয় করে অবশিষ্ট টাকা তছরুপ করা হয়েছে। এদিকে গোটা উপজেলায় টি আর কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের আওতায় গৃহীত তিন শতাধিক প্রকল্পের কোনটাতেই সাইন বোর্ড নেই। সবগুলো সাইন বোর্ড ওই কমর্সকর্তার দপ্তরে পড়ে রয়েছে। এলাকার লোকজন যাতে প্রকল্প সম্পর্কে কোন তথ্য অবগত না হতে পারে এজন্য এই কৌশল অবলম্বন করেছেন প্রকল্প চেয়ারম্যানরা। বিষয়টা দেখার দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ এ তছরুপ প্রক্রিয়ায় জড়িত মর্মে অভিযোগ রয়েছে। নির্দিষ্ট অংকের বিনিময়েই নাকি তিনি বরাবর নীরব ভুমিকা পালন করছেন। প্রকল্পগুলোর লুটপাট ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে এক ডজনেরও বেশি গনমাধ্যম কর্মিকে বিভিন্ন প্রকল্পে সম্পৃক্ত করেছেন সংশ্ষ্টি কর্তৃপক্ষ। ফেজবুক নির্ভর এসব নামধারী গনমাধ্য কর্মিদের প্রকল্পগুলোতেই নাকি বেশি অনিয়ম। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,বড়আলমপুর ইউনিয়নের গাজী খা গ্রামে ঈদগাহ মাঠ সংস্কারের জন্য ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলে মাত্র দেড় হাজার ইটের কাজ করে অবশিষ্ট টাকা লোপাট করা হয়। উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের মতো শানেরহাট ইউনিয়নেও বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ঘোষপুর কবর স্থানে ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড ধরলাকান্দি গ্রামের সাহেব আলীর স’মিল সংলগ্ন ওয়াক্তিয়া মসজিদে প্রাচীর ও অজু খানা সংস্কারের জন্য ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও পুর্বের কাজকে নতুন কাজ হিসেবে দেখিয়ে কয়েকটি বসবার আসন বানিয়ে দায়সারা ধরনের কাজ করে সমযদয় বরাদ্দ পকেটস্থ করা হয়েছে। একই অভিযোগ উঠেছে ১ নম্বর ওয়ার্ডেও। সেখানে ড্রেন নির্মাণ কাজ হয়েছে নামমাত্র। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এই দুই প্রকল্পে তোঘলকি কারবার শুরু করেছেন ওয়ার্ড ইউপি সদস্যরা। ঘোষপুর কবর স্থানে প্রাচীর নির্মাণ বাবদ ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও এলাকাবাসী জানান শুধুমাত্র হাজার খানেক ইট দিয়ে ২০ হাত প্রাচীর নির্মান করা হয়েছে। তাও আবার পলেষ্টার করা হয়নি। কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে তাও জানেন না গ্রামবাসী। রাস্তার পাশে হওয়ায় সামান্য অংশ সিমেন্টের ঘোলা দিয়ে ঢেকে দিলেও প্রাচীরের অপর প্রান্তে তাও করা হয়নি। প্রকল্পের কাজ করেছেন ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ইউপি সদস্য নাজমুল হুদা রতন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কাজের কোন প্রাক্কলন না নিয়েই কাজের সমাপ্তি টেনেছেন। যে কারনে ওই প্রকল্পে প্রাক্কলেন সাথে কাজের কোন মিল নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার দর্শণ কুমার বাবু। অপর দিকে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা ব্যায়ে ১’শ ৬০ ফুট ড্রেন নির্মাণ করার কথা থাকলেও ১’শ ফুট ড্রেন নির্মাণ করে কাজ শেষ করেছেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলু মিয়া। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিন তদন্তে গিয়ে এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করার পর অবশিষ্ট ৬০ ফুট ড্রেন নির্মানের নির্দেশ দেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ তাঁর কার্যালয়ের সংস্কার কাজ সম্পর্কে বলেন-“নীতিমালা ছাড়া কি আর প্রকল্প নেয়া হয়েছে ? ওই প্রকল্পের চেয়ারম্যান কে তা তিনি জানেন না। বলেন- কাগজ দেখতে হবে।