ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: সংসারের টানা পোড়েন থাকলেও বেশ স্বাচ্ছন্দে দিন কাটছিল সুজনের পরিবারের। তবে সেই সুখ আর বেশিদিন সইলো না নসীবে। অসুস্থ হবার পর জানতে পারলেন তার বøাড ক্যান্সার হয়েছে। বাবা মায়ের সব পুঁজি শেষ করে চিকিৎসা করালেও মিলেনি প্রতিকার। বাঁচতে হলে প্রয়োজন কয়েক লাখ টাকা, তবে সে সামর্থ্য নেই পরিবারের।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পারপূগী গ্রামের ফুলমিয়া ও সমিরন বেগমের সন্তান সুজন। বাবা ফুলমিয়া পেশায় অটোচালক। বসতভিটা ছাড়া আর কোন জমি নেই তাদের। সে আয়ে চালাতে হয় সংসারে ভরণ পোষণ। সুজন ঢাকায় চাকরী করলেও অসুস্থতার কারনে করতে পারছেন না চলাফেরা। একমাত্র সন্তানের এমন অবস্থায় দিকবিদিকশুন্য তার পরিবার। সরকার ও বিত্তবানদের মুখ চেয়ে পার করছেন সময়।
সুজনের বন্ধু সোহাগ ইসলাম বলেন, সে আমার বন্ধু, একসাথে এসএসসি পাস করেছি। পড়াশোনা একসাথে করার সুবাধে আমরা বেশিই সময় কাটাতাম। হঠাৎ কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিভিন্ন ডাক্তার দেখানোর পর জানতে পারি তার বøাড ক্যান্সার হয়েছে। আমার বন্ধুর আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভালো না। অর্থের অভাবে যেন তার চিকিৎসা বন্ধ না হয়। সে আগের মত আমাদের মাঝে যেন ফিরে আসতে পারে।
প্রতিবেশী হালিমা আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকেই অনেক শান্ত স্বভাবের ছিল সুজন। এমন একটি ভালো ছেলে অকালে জীবন নষ্ট হয়ে যাবে এটা মেনে নেওয়ার মতন নয়। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে সে পরিবারের হাল ধরতে পারবে তা না হলে পরিবারটি একবারে অসহায় হয়ে পড়বে।
সুজনের ছোট বেলার স্কুল শিক্ষক মাসুদ করিম সেবু বলেন, আমি জানি তার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে দুরবস্থা রয়েছে। আমরা গ্রামবাসী সহ যারা রয়েছি তারা সাধ্যমত চেষ্টা করছি কিন্তু তার যে অর্থের প্রয়োজন তা মেটানো কঠিন। সরকার বা বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে সে আবার সুস্থ হয়ে ফিরবে।
সুজনের বাবা ফুলমিয়া বলেন, আমার ছেলেটা অসুস্থ তার বøাড ক্যান্সার হয়েছে ডাক্তার বলেছে তাকে ভালো করার জন্য ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমি অটো চালিয়ে কোনরকম সংসার চালাই আমার পক্ষে চিকিৎসার টাকা ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমার বাড়ির তিন শতক জমি ছাড়া অন্য কোন জমি জায়গা নেই। বাড়ির জায়গাটুকু বিক্রি করলেও ৪-৫ লাখ টাকার বেশি হবে না। তাই কেউ যদি সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেয় তবে তার চিকিৎসা সম্ভব।
সুজনের মা সমিরন বেগম বলেন, ছেলেটাকে যদি ঢাকায় বা দেশের বাহিরে নিয়ে চিকিৎসা করা হয় তাহলে আগের মত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। আমার ছেলেকে আপনারা সবাই একটু সহযোগিতা করেন। তার কিছু হলে আমার আর কিছু থাকবেনা। আমাদেরকেও মরে যেতে হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, সুজনের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। যতটুকু সম্ভব উপজেলা প্রশাসন তার পাশে দাড়াবে।
