ঢাকাSunday , 12 October 2025
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. খেলাধুল
  4. জাতীয়
  5. বিনোদন
  6. বিশ্ব
  7. রাজনীতি
  8. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাংনীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ: সালিশে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সমাজপতিদের রায়ে তালাক, ধর্ষক পলাতক

Mahamudul Hasan Babu
October 12, 2025 9:31 am
Link Copied!

আমিরুল ইসলাম অল্ডাম মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের পীরতলা গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রী জুথিকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের কামরুল ইসলামের ছেলে মুন্নার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে মুন্না প্রাচীর টপকে প্রবাসী রনির স্ত্রী জুথির ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। পরে চিৎকার শুনে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছুটে এসে মুন্নাকে হাতেনাতে আটক করে। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালী ও সমাজপতিদের হস্তক্ষেপে ঘটনাটি “সমঝোতার” মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা করা হয়।

পরের দিন শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে ইউপি সদস্য ও কয়েকজন গ্রাম্য নেতার উপস্থিতিতে ইটভাটা অফিসের সামনে এক তথাকথিত সালিশে ধর্ষক মুন্নাকে মুক্তি দেওয়া হয়। জানা গেছে, মুন্না সমাজপতিদের হাতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় “রেহাই” পায়।

অন্যদিকে, ধর্ষণের শিকার প্রবাসীর স্ত্রী জুথিকে তালাক দেওয়া হয় সমাজপতিদের চাপে। ইউপি সদস্য আজিজুল হক জানান, জুথিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল, এজন্য তাকে তালাক দেওয়া হয়েছে।

তবে ভুক্তভোগী জুথি জানান, আমাকে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। সমাজপতি ও পুলিশ মিলে আমার সঙ্গে অবিচার করেছে। আমি ন্যায়বিচার পাইনি।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, গাংনী থানার ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ধর্ষক মুন্নাকে আইনের আওতায় না এনে বরং টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ম্যানেজ করে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পীরতলা গ্রামের সমাজ সেবক শাহ আলম জানান, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঘটনা ঘটার পরপরই আমরা সেখানে উপস্থিত হই। পরে ঘটনাটি গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ ও ভবানীপুর ক্যাম্পে এসআই আব্দুল করিমকে জানানো হয়। পরে চার সদস্যের ভবানীপুর ক্যাম্পের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। পরে স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানালে এসআই তার টিম নিয়ে ভবানীপুর ক্যাম্পে ফিরে যান।

এ বিষয়ে ভবানীপুর ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই আব্দুল করিমের সাথে জানতে চাইলে তিনি এ কথা অস্বীকার করে জানান, তিনি ঘটনাস্থলে যাননি। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

ঘটনার বিষয়ে গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ বানী ইসরাইল জানান, ওই ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। প্রবাসীর স্ত্রী জুথিকে তিনি গাংনী থানায় এসে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।

অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন— ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের বিচার কি সমাজপতিরা করতে পারেন?

শনিবার (১১ অক্টোবর) সরেজমিনে গেলে জানা যায়, অভিযুক্ত ধর্ষক মুন্না পলাতক রয়েছে।

এলাকাবাসী দাবি করেছেন, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে ধর্ষক মুন্না এবং যারা বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করেছে, সেই সব সমাজপতিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।